নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারপ্রধান নিয়োগ, জাতীয় সংসদে উচ্চকক্ষ গঠন এবং নারীদের জন্য ১০০টি সংরক্ষিত আসনে নির্বাচন পদ্ধতি— এই তিনটি গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার ইস্যুতে একমত হতে পারছে না জাতীয় ঐক্য কমিশন।
এই তিনটি বিষয়ে, বিশেষ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারপ্রধান নির্বাচনের প্রক্রিয়া নিয়ে বিএনপি ও জামায়াত প্রায় অভিন্ন প্রস্তাব দিলেও জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ (এনসিপি) কয়েকটি দলের ভিন্নমতের কারণে এ বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেনি কমিশন।
৩১ জুলাইয়ের মধ্যে ১৯টি মূল সাংবিধানিক সংস্কার বিষয়ে রাজনৈতিক ঐক্য গড়ে তুলে একটি জাতীয় সনদ (রিফর্ম চার্টার) চূড়ান্ত করতে চায় কমিশন। কিন্তু দ্বিতীয় দফা সংলাপ এগোচ্ছে ধীরগতিতে। ওই তিনটি বিষয়ে দলগুলোর মতপার্থক্যই এর বড় কারণ।
অচলাবস্থা কাটাতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ও সংসদের উচ্চকক্ষের কাঠামো নিয়ে একাধিক সংশোধিত প্রস্তাব দিয়েছে কমিশন।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার
এর আগে, রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচন তত্ত্বাবধানের জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনর্প্রতিষ্ঠা এবং এর মেয়াদসহ অন্যান্য বিষয়ে একমত হলেও তত্ত্বাবধায়ক সরকারপ্রধান নিয়োগের প্রক্রিয়ায় ভিন্নমত দেখা দেয়।
বিএনপি প্রথমে পাঁচটি বিকল্প প্রস্তাব দিয়েছিল। জামায়াত দিয়েছিল তিনটি। তবে সম্প্রতি তারা সংশোধিত প্রস্তাব দিয়েছে যাতে মূল পার্থক্য খুব একটা নেই।
গত সোমবার কমিশনে জমা দেওয়া সংশোধিত প্রস্তাবে চার সদস্যবিশিষ্ট একটি অনুসন্ধান কমিটি গঠনের কথা বলেছে, যার সদস্য হবেন— প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী দলীয় নেতা, জাতীয় সংসদের স্পিকার এবং ডেপুটি স্পিকার (বিরোধী দলীয়)। এই কমিটি ক্ষমতাসীন ও বিরোধী দল থেকে পাঁচজন করে মোট ১০ জনের মধ্য থেকে আলোচনার মাধ্যমে একজনকে বাছাই করবে। মতৈক্য না হলে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী অনুযায়ী প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হবে। তবে রাষ্ট্রপতিকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারপ্রধানের দায়িত্ব দেওয়ার ধারাটি বাদ রাখা হবে।
অন্যদিকে, জামায়াত তাদের চূড়ান্ত প্রস্তাবে পাঁচ সদস্যের অনুসন্ধান কমিটি চেয়েছে, যেখানে বিএনপি প্রস্তাবিত চারজনের সঙ্গে জাতীয় সংসদের তৃতীয় বৃহত্তম দলের একজন প্রতিনিধি থাকবেন।
তাদের প্রস্তাব, ক্ষমতাসীন ও প্রধান বিরোধী দল থেকে তিনজন করে, তৃতীয় বৃহত্তম দল থেকে দুইজন এবং অন্যান্য দল বা স্বতন্ত্ররা একজন করে প্রার্থী মনোনয়ন দেবেন। মতৈক্য না হলে তারাও রাষ্ট্রপতি ব্যতীত ত্রয়োদশ সংশোধনীর পদ্ধতি অনুসরণের প্রস্তাব দিয়েছে।
উভয় দলই মনে করে, অনুসন্ধান কমিটির সদস্যদের সম্মতির ওপর ভিত্তি করেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারপ্রধান নির্বাচন করা উচিত।
জামায়াতের পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট প্রস্তাবের প্রতি নমনীয়তা দেখিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, অনুসন্ধান কমিটিতে সংসদের তৃতীয় বৃহত্তম দলের প্রতিনিধি থাকলে সমস্যা নেই।
তবে এনসিপিসহ কয়েকটি দল ত্রয়োদশ সংশোধনী অনুযায়ী রাষ্ট্রপতির বিকল্প উপায় রাখার প্রস্তাবে আপত্তি জানিয়েছে। তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকারপ্রধান নিয়োগে র্যাংকড চয়েস ভোটিং পদ্ধতির পক্ষে মত দিয়েছে, যাতে রাজনৈতিক সমঝোতার ভিত্তিতে নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিকে মনোনয়ন দেওয়া যায়।
এনসিপির প্রস্তাব ছিল— তত্ত্বাবধায়ক সরকারপ্রধান নির্বাচন পদ্ধতিতে র্যাংকড চয়েস ভোটিং চালু করা হোক।
জামায়াতের নায়েবে আমির ড. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের মঙ্গলবার বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারপ্রধান নির্বাচন হবে সম্মতির ভিত্তিতে, সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে নয়। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যেন অবিশ্বাস তৈরি না হয়, সে জন্য আলোচনার মাধ্যমে গ্রহণযোগ্য সমাধানে পৌঁছাতে হবে।’
ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাব
জামায়াতের কাঠামোর অনুরূপ পাঁচ সদস্যের অনুসন্ধান কমিটির প্রস্তাব দিয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনও। তাদের প্রস্তাব অনুযায়ী প্রত্যেক রাজনৈতিক দল ও স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যদের একজন করে উপযুক্ত প্রার্থীর নাম দিতে বলা হবে। এরপর যদি সম্মতিতে পৌঁছানো না যায়, তাহলে ক্ষমতাসীন ও প্রধান বিরোধী দল তিনজন করে, আর তৃতীয় বৃহত্তম দল দুইজনকে মনোনয়ন দেবে।
এই প্রক্রিয়ায় ক্ষমতাসীন দল বিরোধী দলের তালিকা থেকে একজন এবং তৃতীয় বৃহত্তম দলের তালিকা থেকে একজনকে বেছে নেবে। বিরোধী দলও তাই করবে। তৃতীয় বৃহত্তম দল ক্ষমতাসীন ও বিরোধী দল উভয়ের তালিকা থেকে একজন করে বেছে নেবে। যদি এসব প্রার্থীর মধ্যে কারো ওপর ঐকমত্য হয়, তবে তাকেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারপ্রধান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হবে; অন্যথায় র্যাংকড চয়েস ভোটিং পদ্ধতি ব্যবহার করা হবে।
র্যাংকড চয়েস ভোটিং এমন একটি নির্বাচন পদ্ধতি, যেখানে ভোটাররা একাধিক প্রার্থীকে তাদের পছন্দের ক্রমানুসারে (প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় ইত্যাদি) ভোট দেন।
গত মঙ্গলবার প্রেস ব্রিফিংয়ে এনসিসির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, ‘অনেক দলই বিচার বিভাগের সদস্যদের (বিশেষ করে অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতিদের) অন্তর্ভুক্তির বিপক্ষে। এর পরিবর্তে আবার অনেকে র্যাংকড চয়েস ভোটিংও চায়। সেই সঙ্গে ত্রয়োদশ সংশোধনীর পদ্ধতি ফিরিয়ে আনার বিরোধিতাও আছে।’
তিনি বলেন, ‘আসলে আমরা কিছুটা অচলাবস্থায় আছি— অনুসন্ধান কমিটি সিদ্ধান্ত কীভাবে নেবে, অচলাবস্থা কীভাবে কাটাবে তা নিয়ে। আমরা দলগুলোকে তাদের অবস্থান পুনর্বিবেচনার অনুরোধ জানিয়েছি।’
উচ্চকক্ষ গঠন ও সংরক্ষিত নারী আসন
বিএনপি, জামায়াত, এনসিপিসহ প্রায় সব রাজনৈতিক দল দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ গঠনের পক্ষে মত দিয়েছে, যেখানে উচ্চকক্ষে ১০০টি এবং নিম্নকক্ষে ৪০০টি আসন থাকবে। পাশাপাশি, সংরক্ষিত নারী আসন ৫০ থেকে বাড়িয়ে ১০০ করার প্রস্তাবও প্রায় সর্বসম্মতভাবে গৃহীত হয়েছে।
তবে নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ে বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে মতপার্থক্য রয়ে গেছে।
জামায়াত প্রস্তাব করেছে, উচ্চকক্ষ এবং সংরক্ষিত নারী আসন উভয় ক্ষেত্রেই ভোটের আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতিতে নির্বাচন হোক। অন্যদিকে বিএনপি চায়, এই নির্বাচন নিম্নকক্ষের সদস্যসংখ্যা অনুযায়ী আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের ভিত্তিতে হোক।
সূত্র: ইউএনবি
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটারদের আস্থা ফিরিয়ে আনা এবং তাদের ভোটকেন্দ্রে ফিরিয়ে আনা বড় চ্যালেঞ্জ হবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিন। বিশেষ করে নারী ভোটারদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করাকেই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছে নির্বাচন কমিশন।
শনিবার (২৬ জুলাই) সকালে খুলনার আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় অংশগ্রহণের আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
সিইসি বলেন, ‘সুষ্ঠু নির্বাচন করার চ্যালেঞ্জ তো বহুবিধ। নিত্যনতুন চ্যালেঞ্জ আমাদের সামনে দেখা দিচ্ছে। সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে, মানুষের আস্থা ফেরানো। নির্বাচন কমিশন সম্পর্কে, নির্বাচন ব্যবস্থা সম্পর্কে মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনা জরুরি।’
‘দ্বিতীয় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে, ভোটারদের কেন্দ্রমুখী করা। ভোট দিতে না পেরে মানুষ আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। তাই নির্বাচনের প্রতি জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনা এখন আমাদের বড় চ্যালেঞ্জ। আমরা চাই, সবাই ভোটাধিকার প্রয়োগ করুক এবং স্বতঃস্ফূর্তভাবে কেন্দ্রে আসুক। বিশেষ করে নারী ভোটারদের সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে আমরা বাড়তি গুরুত্ব দিচ্ছি।’
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নির্বাচন নিয়ে ভুল তথ্য প্রচার হচ্ছে উল্লেখ করে নাসির উদ্দিন বলেন, ‘নির্বাচনের আগে যথাসম্ভব সংস্কারের কাজ করা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে নতুন চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছে প্রযুক্তির অপব্যবহার। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ফ্রিস্টাইলে যাচাই-বাছাই না করে ভুল তথ্য প্রচার করা হচ্ছে।’
‘এআই (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা) পদ্ধতি একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এই পদ্ধতি ব্যবহার করে হুবহু নকল করা হচ্ছে একজনের বক্তব্য। এজন্য দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞ দল কাজ করছে। আধুনিক যুগে এটি অস্ত্রের চেয়েও ভয়াবহ। সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে এটি একটি বড় সমস্যা।’
তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচনের আগে সন্ত্রাস দমন এবং অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান চলবে। আমরা চাই স্বচ্ছ নির্বাচন। রাতের আঁধারে কোনো কার্যক্রম নয়, দিনের আলোতেই সব কিছু করতে চাই যাতে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা যায়। আমরা জাতিকে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিতে চাই।’
সব অপপ্রচার থেকে বিরত থাকার জন্য মিডিয়াকর্মীদের সার্বিক সহযোগিতা চেয়ে সিইসি বলেন, ‘সুষ্ঠু নির্বাচনের ক্ষেত্রে আমরা ওয়াদাবদ্ধ। গ্রহণযোগ্য নির্বাচন না হলে দেশের ভবিষ্যৎ অন্ধকার হয়ে যাবে। একটি নির্বাচনে বহুবিধ চ্যালেঞ্জ রয়েছে। নির্বাচন কমিশন সম্পর্কে জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনা এবং ভোটারদের ফিরিয়ে আনার জন্যই আমরা কাজ করছি।’
মতবিনিময় সভায় খুলনা বিভাগের অতিরিক্ত আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা, বিভিন্ন জেলার জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, জনগণের প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত না করে এবং একটি সঠিক গণতান্ত্রিক কাঠামো জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠা না করে কোনও প্রকৃত সংস্কার সম্ভব নয়।
শুক্রবার (২৫ জুলাই) এক আলোচনাসভায় বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি তাদের সমালোচনা করেন যারা মনে করেন, সংস্কার রাতারাতি বা কয়েকটি বৈঠকের মধ্য দিয়েই হয়ে যেতে পারে। তিনি বলেন, ‘সংস্কার একটি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে সম্পন্ন করতে হয়। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া।’
বিএনপি নেতা বলেন, যদি সরকার মনে করে যে, তারা চাইলেই কাল থেকে পুলিশ ঘুষ নেওয়া বন্ধ করে দেবে, তাহলে সেটা হবে না। ‘আপনাকে এমন একটি কাঠামো তৈরি করতে হবে যেখানে ঘুষ নেওয়াকে নিরুৎসাহিত করা হয়।’
জিয়া পরিষদ এই আলোচনাসভার আয়োজন করে, যার শিরোনাম ছিল ‘জুলাই অভ্যুত্থান: প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি’। এটি গত বছরের গণ-অভ্যুত্থানের প্রথম বার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয় প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত হয়।
ফখরুল দেশের উন্নয়নে বাধা হিসেবে বিদ্যমান আমলাতন্ত্রকে দায়ী করেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের আমলাতন্ত্র উন্নয়নের একটি বড় বাধা। এটি একটি নেতিবাচক আমলাতন্ত্র এবং এটিকে একটি ইতিবাচক কাঠামোয় রূপান্তর করতে হবে। তা করতে হলে মূলত জনগণকে এই প্রক্রিয়ায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।’
বিএনপি নেতা বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত জনগণের কাছে ফিরে যাওয়া, তাদের চাহিদা বোঝা এবং সেই চাহিদাকে রাষ্ট্র পরিচালনায় প্রতিফলিত করা।
নির্বাচন চাওয়ার কারণে বিএনপিকে ঘিরে চলমান সমালোচনার প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, ‘আমরা নির্বাচন নিয়ে কথা বলা শুরু করতেই বলা হলো, বিএনপি শুধু নির্বাচন চায়। কিন্তু কেউ কি ভেবে দেখেছে, আমরা কেন নির্বাচন চাই?’
তিনি ব্যাখ্যা করে বলেন, নির্বাচন ছাড়া প্রকৃত জনপ্রতিনিধি নির্বাচন করা যায় না। ‘আর যদি প্রতিনিধি না থাকে, তাহলে তারা কীভাবে সংসদে যাবে? আর যদি নির্বাচিত সংসদ না থাকে, তাহলে কীভাবে জনগণের শাসন প্রতিষ্ঠা হবে?’
ফখরুল বলেন, ‘আপনি দেশ চালাতে বাড়ি ও বিদেশ থেকে কয়েকজন লোক ভাড়া করে আনতে পারেন না। এটি সম্ভব নয়।’
বাংলাদেশের আহতদের চিকিৎসায় পূর্ণ সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে ঢাকায় সফররত চীনের উহান থার্ড হাসপাতালের একটি মেডিকেল টিম।
শনিবার (২৬ জুলাই) চীনা দূতাবাস জানায়, বাংলাদেশ বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে দলটি। আহতদের চিকিৎসায় যা যা প্রয়োজন, তার সবকিছুই করতে চায় তারা।
বাংলাদেশি চিকিৎসকদের সঙ্গে আলাপ করে দলটি ক্ষতস্থানে সংক্রমণ রোধ এবং আহতদের নিয়মিত যত্ন নেওয়ার পদ্ধতি নিয়ে পরামর্শ দিয়েছে।
তারা আহতদের শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ, ক্ষতস্থান পরিষ্কার, ড্রেসিং পরিবর্তন, ধমনীতে পাংচার এবং অস্ত্রোপচারে সহায়তা প্রদানসহ নানা কাজে অংশ নেন।
এ ছাড়া, সিঙ্গাপুর ও ভারতের চিকিৎসকদের সঙ্গেও বাংলাদেশের চিকিৎসকদের যৌথ পরামর্শে অংশ নেয় চীনা মেডিকেল দলটি।
গাজীপুরের কালীগঞ্জে ‘জুলাই পুনর্জাগরণ’ অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে শপথ গ্রহণ করেছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে দেশব্যাপী আয়োজিত ‘লাখো কণ্ঠে শপথ পাঠ’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে কালীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
শনিবার (২৬ জুলাই) সকালে উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে এক ভাবগম্ভীর পরিবেশে এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে জুলাই মাসে নিহত শহীদদের স্মরণে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। মোনাজাতে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং দেশের অব্যাহত শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য প্রার্থনা করা হয়।
উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত এই শপথ পাঠ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তনিমা আফ্রাদ। তিনি উপস্থিত সকলকে শপথ বাক্য পাঠ করান। দেশের সংবিধান ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুন্নত রাখা, দুর্নীতি ও সামাজিক অবক্ষয়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো এবং দেশ গঠনে আত্মনিয়োগ করার অঙ্গীকার করেন অংশগ্রহণকারীরা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইউএনও তনিমা আফ্রাদ বলেন, "জুলাই পুনর্জাগরণ কেবল একটি আনুষ্ঠানিকতা নয়, এটি আমাদের চেতনার বাতিঘর। সেই শহীদদের আত্মত্যাগ থেকে শিক্ষা নিয়ে আমাদের নতুন প্রজন্মকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হতে হবে। আজকের এই সম্মিলিত শপথ হোক দেশ ও মানুষের কল্যাণে নিজেদের উৎসর্গ করার একটি নতুন অঙ্গীকার। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী থেকে শুরু করে সাধারণ নাগরিক পর্যন্ত সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টাই একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে পারে।"
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) তাসনিম উর্মি, কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলাউদ্দিন, উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা নেতৃবৃন্দ সহ উপজেলায় কর্মরত গণমাধ্যম কর্মীবৃন্দ।
বক্তারা জুলাইয়ের শহীদদের আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করে বলেন, তাদের দেখানো পথ অনুসরণ করে দেশের উন্নয়নে একযোগে কাজ করতে হবে। উপজেলা প্রশাসনের এই সফল আয়োজনে সর্বস্তরের মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ অনুষ্ঠানটিকে এক নতুন মাত্রা দেয়। এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানটি কালীগঞ্জের মানুষের মধ্যে দেশ ও সমাজের প্রতি দায়িত্ববোধ এবং নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি করবে বলে আশা প্রকাশ করেন আয়োজকরা।
সাগরের নিম্নচাপটি পশ্চিম-উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে। এতে উপকূলীয় এলাকা ও সমুদ্রবন্দরগুলোর ওপর দিয়ে দমকা বা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। পাশাপাশি, উপকূলীয় জেলাগুলো ও চরে এক থেকে তিন ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস দেখা দেতে পারে।
শনিবার (২৬ জুলাই) সকালে আবহাওয়া অধিদপ্তর এমন তথ্য জানিয়েছে। এ সময়ে দেশের চারটি বন্দরকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্কসংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
সংস্থাটি বলছে, উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এবং তৎসংলগ্ন পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় অবস্থানরত নিম্নচাপটি পশ্চিম-উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে শনিবার (২৬ জুলাই) সকাল ৬টায় ঝাড়খণ্ড ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। এটি আরও পশ্চিম-উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে।
মৌসুমী বায়ুর অক্ষের বর্ধিতাংশ রাজস্থান, উত্তর প্রদেশ, নিম্নচাপের কেন্দ্রস্থল, পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের উপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে প্রবল অবস্থায় রয়েছে।
এতে খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
সেই সঙ্গে খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে। এ সময়ে সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে।
এদিকে আবহাওয়ার এক বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এবং বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় অবস্থানরত নিম্নচাপটি পশ্চিম-উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে শুক্রবার মধ্যরাতে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন ঝাড়খণ্ডে অবস্থান করছে। এটি আরও পশ্চিম-উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে।
এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগরে বায়ুচাপের তারতম্যের আধিক্য বিরাজ করছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর, বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা ও সমুদ্রবন্দরসমূহের উপর দিয়ে দমকা/ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
এছাড়া অমাবস্যা ও নিম্নচাপের কারণে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরিশাল, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চর ১-৩ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।
ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থান স্মরণে জুলাই মাসব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি) কর্তৃক আজ শনিবার (২৬ জুলাই) বিশেষ পরিচ্ছন্নতা ও মশক নিধন অভিযান পরিচালিত হয়েছে। ডিএসসিসি অঞ্চল-৭ এর ৭১ নং ও ৭২ নং ওয়ার্ডে (গ্রীন মডেল টাউন - মান্ডা এলাকা) পরিচালিত এ অভিযানে কর্পোরেশনের মাননীয় প্রশাসক জনাব মো. শাহজাহান মিয়া এঁর উপস্থিতিতে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব জনাব মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদী প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
সকাল ০৬:০০ ঘটিকায় শুরু হওয়া এ পরিচ্ছন্নতা অভিযানে ডিএসসিসির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ ও স্বাস্থ্য বিভাগের ছয় শতাধিক কর্মী এবং স্থানীয় জনগণ এই বিশেষ পরিচ্ছন্নতা অভিযানে অংশগ্রহণ করেন। পরিচ্ছন্নতা অভিযানের অংশ হিসেবে ড্রেন, নর্দমা ও ফুটপাতের ময়লা পরিষ্কার ও মশার ঔষধ প্রয়োগ করা হয়। এছাড়া, জনসচেতনতামূলক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে স্থানীয় বাসিন্দা, রেড ক্রিসেন্ট এবং বিডি ক্লিন সদস্যদের অংশগ্রহণে জনসচেতনতামূলক একটি র্যালি অনুষ্ঠিত হয়।
পরিচ্ছন্নতা প্রোগ্রাম চলাকালীন সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব জনাব মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদী বলেন, নগরবাসীর পরিচ্ছন্নতা অভ্যাস পরিবর্তনের লক্ষ্যে বিশেষ অভিযান পরিচালনা শুরু করেছিলাম, তার ইতিবাচক ফলাফল দৃশ্যমান হচ্ছে। সচিব আরও বলেন, অভিযানসমূহ স্থানীয় জনগোষ্ঠীর সাথে সিটি কর্পোরেশনের সম্পর্ক উন্নয়ন ও অঞ্চলভিত্তিক প্রয়োজনীয় পরিকল্পনা প্রণয়নে ব্যাপক ভূমিকা পালন করছে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রশাসক জনাব মো. শাহজাহান মিয়া বলেন, "নাগরিক সম্পৃক্তকরণের মাধ্যমে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর ক্ষমতায়নই আমাদের অভিযানের মূল উদ্দেশ্য।" ডিএসসিসির ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমে নাগরিকরাই সবচেয়ে গুরত্বপূর্ণ অংশীদার উল্লেখ করে তিনি বলেন অঞ্চলভিত্তিক এই বিশেষ পরিচ্ছন্নতা ও মশক নিধন অভিযান অব্যাহত থাকবে।
পরিচ্ছন্নতা অভিযানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব মো: জহিরুল ইসলাম, সচিব মুহাম্মদ শফিকুল ইসলামসহ সকল বিভাগীয় প্রধান এবং স্থানীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
কৃষি নির্ভর মেহেরপুরে জাতীয় রসালো ফল কাঠাল নিয়ে বিপাকে পড়েছেন চাষিরা। এবারে কাঠালের ফলন ভালো হলেও বাজারে দাম না থাকায় গাছেই পেকে নষ্ট হচ্ছে কাঠাল। ব্যাবহৃত হচ্ছে গবাদিপশুর খাদ্য হিসেবে।
কৃষি বিভাগ বলছে স্থানীয় ভাবে বাজার সৃষ্টি করা গেলে এই সমস্য থাকবে না।
জেলার গ্রাম অঞ্চলের সড়কের দুপাশসহ বিভিন্ন এলাকার কাঠাল বাগানের প্রতিটি গাছেই ঝুলে আছে বড় বড় কাঠাল। স্থানীয় ভাবে বাজার না থাকায় এসব কাঠাল বিক্রি করতে পারছে না চাষিরা। চাহিদা না থাকাকে পুজি করে ভ্রাম্যমান কাঠাল ব্যবসায়ীরা কম দামে চাষিদের কাছ থেকে কিনছে এসব ছোট বড় কাঠাল।
স্থানীয় বাজার ঘুরে দেখা যায়, একটি ১৫ থেকে ২০ কেজি ওজনের বড় আকারের প্রতিটি কাঠাল বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকায়। অনেকে দাম না পেয়ে কাঠাল কেটে গরু ছাগলের খাবার হিসেবে দিচ্ছে। ব্যবসায়ীরা বলছে, গত বছর যে কাঠাল ৮০ থেকে ৯০ টাকায় কিনেছি সেই কাঠাল এবারে কিনছি ৩০ থেকে ৪০ টাকায়। তাও বিক্রি করতে কষ্ট হচ্ছে।
কৃষি বিভাগের তথ্য মতে জেলায় ১৬৫ হেক্টর জমির কাঠাল বাগান থেকে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫ হাজার ৩শ মেট্রিকটন।
জামাল হোসেন বলেন, আমার বাড়ির উঠানে থাকা একটি কাঠাল গাছে প্রায় শতাধিক কাঠাল ধরে ছিলো।যার মধ্যে আমি সাতটা কাঠাল শুরুর দিকে বিক্রি করে ছিলাম ২"শ ৫০ টাকা করে। আর বতর্মানে প্রতি পিচ কাঠালের দাম দিতে চাইছে ১৫ টাকা করে। তাই বিক্রি না করে কাঠাল কেটে গরুর নাইন্দে খাদ্য হিসেবে দিচ্ছি। এই দামে কাঠাল বেচে পড়তা হয়।
আরেক বাগানি আমজাদ হোসেন বলেন,গাছে প্রচুর কাঠাল ধরেছে। গাছের কাছে ব্যাপারী গেলে ঘুরে আসছে। নেওয়ার লোক নাই ১৫ থেকে ২০ কেজি ওজনের কাঠাল দাম বলছে কম এখন গাছেই কাঠাল পেকে পোচে যাচ্ছে।
ইউপি সদস্য শাহিন আহমেদ বলেন,
এত বড় বড় কাঠাল গাছে পেকে পড়ে নষ্ট হচ্ছে গরুকে খাওয়াইছি। নেয়ার লোক নাই ২০ টাকা ৩০ টাকা দাম বলছে। এখন কি হবে নষ্ট হচ্ছে পচে। অথচ এই কাঠাল এমন একটি ফল যার পাতা থেকে শুরু করে সবকিছুর ব্যাবহার হয়। তাছাড়া একটি সময় ছিলো প্রতিটি বাড়িতেই কাঠাল গাছ ছিলো। বতর্মানে তেমনটির আর দেখা মিলছে না। বরং এখন কাঠাল বাগান কেটে ফেলা হচ্ছে।
বিধবা রওশনারা বলেন,বাগানে কাঠাল পড়ে আছে নেয়ার লোক নাই। গরু ছাগলে খাইছে মানুষ খাইছে না। পাকা কাঠাল পইড়ি নষ্ট হইছে।
কাঠাল বিক্রেতা রইচ উদ্দিন বলেন,গত বার যে কাঠাল ৮০ থেকে ৯০ টাকায় কিনেছি সেই কাঠাল এবারে কিনছি ২০ টাকা করে। আর আমাদের খরচ যোগ হচ্ছে ১০ টাকা। অথচ সেই কাঠাল হাটে বিক্রি করতে গেলে ২০ টাকাতেও বিক্রি হচ্ছে না। আবার কিছু বাগান মালিক আছে কম দামে কাঠাল বিক্রি না করে ঘাসের বিকল্প হিসেবে গরু ছাগলকে খেতে দিচ্ছে।
আমরা যে ১০ টাকা লাভ করবো তা করতে পারছিনি। বাগান থেকে ঘুরতে হচ্ছে ওখানে বেচতে পারছিনি।
মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোঃ সামসুল আলম বলেন, মেহেরপুর জেলায় ১৬৫ হেক্টর জমিতে কাঠাল বাগান আছে এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫ হাজার ৩শ মেট্রিকটন। যে পরিমান উৎপাদন হয়েছে সে পরিমান চাহিদা নেই। মেহেরপুরে বাজার না থাকার কারনে কাঠাল বিপনন করতে সমস্যা হচ্ছে। এই ব্যাপারে কৃষি বিপনন কেন্দ্রের সাথে যোগাযোগ করেছি এবং ডিসির সাথে কথা বলেছি এখানে স্থানীয় ভাবে বাজার করা যায় কি না। যদি করা যায় তাহলে সমস্যা থাকবে না। আমরা কৃষদের পরামর্শ দেব, দেশের যে এলাকায় কাঠালের চাহিদা আছে সেখানে বিক্রি করতে পারলে লাভবান হবে।
মন্তব্য